আন্তর্জাতিক ক্ষ্যাতিসম্পন্ন মুফাস্সিরে কুরআন আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ১ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী জন্মগ্রহণ করেন ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪০ সালে সাঈদখালি গ্রাম, ইন্দুরকানী, বালিপাড়া, পিরোজপুর, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশে)।
তিনি ছিলেন একাধারে একজন বাংলাদেশী ইসলামি পণ্ডিত, লেখক,বক্তা এবং রাজনীতিবিদ ও পিরোজপুর ১ আসনের প্রাক্তন সংসদ সদস্য।
তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে-আমীর ছিলেন। তিনি ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রথমবার এবং ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তার পুরো জীবনকে তিনি ইসলামী রাজনীতি এবং দাওয়াতের মাদ্যমে অতিবাহিত করেন। এছারাও তিনি ছিলেন একজন লেখক।
তার প্রকাশিত বইসমূহ হলো:
▪️পরকালের জীবনী ।
▪️দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার নীতি ।
▪️ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি ও প্রাসঙ্গিক ধারণা।
▪️আমি জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিবো কেন?
▪️ইসলাম সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে ।
▪️শিশুর প্রশিক্ষণের পদ্ধতি ।
▪️নবীর দোয়া ।
▪️কেন কাদিয়ানিরা মুসলমান নয় ।
▪️পবিত্র কুরআনের অলৌকিক ঘটনা ।
▪️নীল সাগরের দেশে ।
▪️আমার পরিবারের উপর আমার কর্তব্য ।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে রাজাকার বাহিনীর সদস্য হিসাবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থেকে সাহায্য করার অভিযোগে তাকে ২০১৩ সালে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
২০১৩ সালে, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) তাকে বিশটির মধ্যে আটটিতে দোষী সাব্যস্ত করে, যার মধ্যে হত্যা, ধর্ষণ এবং ধর্মীয় নিপীড়ন অন্তর্ভুক্ত ছিল। রায়, যা তাকে মৃত্যুদণ্ডের নিন্দা করেছিল, তা উল্লেখযোগ্য দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মনোযোগ সৃষ্টি করেছিল, যার ফলে সমর্থন এবং সমালোচনা উভয়ই হয়েছিল।এই রায় পরবর্তীকালে তার সমর্থক, বিরোধীদের এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে জনগণের বিক্ষোভ এবং সংঘর্ষের দিকে পরিচালিত করে, যার ফলে দাঙ্গা এবং অস্থিরতার একটি সিরিজ হয়।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে, সুপ্রিম কোর্ট তার সাজাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে পরিণত করে ।। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা তার বিচারের সমালোচনা করেছিল ।
এই মহান মানুষটিকে কুরানের পাখি ও বলা হতো। কেননা তিনি বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত এবং বাইরের বিভিন্ন দেশে গিয়ে ইসলামের বানী মানুষদের নিকট পৌছে দিয়েছিলেন।
আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ১৪ ই আগষ্ট ২০২৩ সালে ইন্তেকাল করেন এবং তাকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ও তার সমর্থকেরা মনে করেন যে, তাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে,তাই মানুষ তাকে শহীদ বলে আখ্যায়িত করে।তার মৃত্যুতে সারা বিশ্বের মুসলমানরা শোকাহত হয়েছিল।